বরিশালে ডাক্তার রমিজ বেতন নেয় সরকারি ,চাকরি করে বেসরকারি Latest Update News of Bangladesh

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩০ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:
আইপিএল নিলামে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের প্রতি আগ্রহ নেই শেবাচিম হাসপাতালে পরিচালকের দায়িত্ব নিলেন ব্রিঃজেঃ একেএম মশিউল মুনীর ‘সংস্কারের পাশাপাশি অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা জরুরি’ : তারেক রহমান পিরোজপুরে ২৪ বছরেও সম্পন্ন হয়নি আয়রন ব্রিজ নির্মাণ কাজ, জনদূর্ভোগ চরমে বরিশালে তথ্য মেলা: দুর্নীতি প্রতিরোধে জোরালো পদক্ষেপ মমতার বাঁধায় বন্ধ হতে পারে বাংলাদেশে আলু রপ্তানি ! কাউখালী উপজেলা জামায়াত ইসলামীর কমিটি গঠন বিএনপির শোক মিছিলে হামলা: রিমান্ডে হাসানাতপুত্র মঈন আব্দুল্লাহ খুনি হাসিনার পুনর্বাসন, জীবন দিয়ে প্রতিরোধ করবে শহীদ ফাউন্ডেশন: সারজিস আলম নতুন কমিশনের দায়িত্ব ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা: রাষ্ট্রচিন্তা পরিষদ




বরিশালে ডাক্তার রমিজ বেতন নেয় সরকারি ,চাকরি করে বেসরকারি

বরিশালে ডাক্তার রমিজ বেতন নেয় সরকারি ,চাকরি করে বেসরকারি




এস.এন পলাশ ॥   ডাক্তার এস এম রমিজ উদ্দিন, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে লেকচারার হিসেবে ৮ মাস পূর্বে যোগদান করেন। নিয়মিত কলেজে আসেন এমবিবিএস শিক্ষার্থীদের ক্লাস করান অর্থাৎ যথানিয়মেই তিনি তার উপর অর্পিত দ্বায়ীত্ব যথাযথভাবে পালন করেন এমনটাই মনে করছেন কর্তৃপক্ষ। তবে, অন্তরালে এই মহান পেশাটিকে কলুসিত করে চলেছেন সু-কৌশলে। সে বিষয়ে স্বয়ং কলেজ অধ্যক্ষ সম্পুর্ন অজ্ঞ বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে দ্বায় স্বীকার না করলেও পরে প্রশ্নবানের চাঁপে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নেন।

এরপর থেকেই বেরিয়ে আসতে শুরু করে ভয়াবহ সব তথ্য। যাতে যে কারও পিলে চমকে যাবে নিঃসন্দেহে। সরকারি কর্মকর্তা প্র-বিধান মতে কোন মতেই কোন কর্মকর্তা যদি কোন সরকারি দপ্তরে চাকরি করেন, সেক্ষেত্রে একইসাথে দুইটি চাকরি বা অন্যকোন সরকারি, বেসরকারি, আধা স্বায়ত্বশাসিত, অটোনমাস বা যেকোন দপ্তর যেখানে বেতন প্রদান করা হয় এমন কোন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকতে পারবেনা। বিশেষ করে সরকারি গেজেটেড কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে এই বিধান আরও কঠোরতর। একইসাথে দুইটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে এমন প্রমান পেলে সাথে সাথে ওই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্তসহ বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার বিধান রয়েছে। অথচ এর ভয়াবহ ব্যতিক্রম দেখা গেছে দক্ষিনাঞ্চলের সর্ববৃহত চিকিৎসা বিদ্যাপিঠ শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ এর এই প্রভাষক এর বিরুদ্ধে। বিষয়টি এতটাই কৌশলে করা হয়েছে যে ডিজিটাল বায়োমেট্রিক পদ্ধতিকে হার মানতে হয়েছে। তিনি একইসাথে শেবামেক এবং শরিয়তপুর জেলার নরিয়া উপজেলায় গরিসর সেন্ট্রাল হসপিটালে কাজ করে যাচ্ছেন।

একজন সরকারি ডাক্তার কিভাবে বেসরকারি হসপিটালে কর্মরত আছেন ? এর উত্তর খুঁজতে গেলে বেরিয়ে আসে আরো চাঞ্চল্যকর খবর। সরজমিন সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত শুধু ডাক্তার রমিজই নয় এমন কর্মকান্ডে জরিত রয়েছে শেবামেকের আরো অনেকেই। ফিঙ্গার প্রিন্টের ফাঁকফোকরে জড়িত স্বয়ং (শেবামেকের) অধ্যক্ষ মোঃ মাকসুমুল হক নিজেও। সরকার জনগনের জন্য ভালো কাজ করতে গেলেও এইসকল দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তাদের কারনে বদনামের ভাগিদার হতে হচ্ছে। অর্থ যেখানে মুখ্য জনসেবা সেখানে নিভৃতে কাঁদে।

সরকার যুগের সাথে তাল মিলিয়ে হাজিরায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করলে সেখানেই বাসা বাঁধে দুর্নীতির বরপুত্র। বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিনে রেজিষ্ট্রেশন করার সময়ে ঐ দূর্নীতিগ্রস্থ ডাক্তারদের চক্রটি তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করেন। নাম না বলার শর্তে একজন জানান, হাজিরা রেজিষ্ট্রেশন করার সময়ে একজনের তিনটি আঙ্গুলের ছাপ দেয়ার কথা থাকলেও একেক নামের উপর তিনজনের তিনটি আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করেন। যাহাতে ওই তিনজনের যে কোনো একজন উপস্থিত থাকলেই তিনজনের হাজিরা হয়ে যায়। এমন করেই মাসের পর মাস শেবামেকে উপস্থিত না থাকলেও তাদের হাজিরা উঠে যাচ্ছে ঠিকমতই এবং বেতনও তুলছেন যথাসময়ে। আবার শরিয়তপুরে যেখানে কর্মরত সেখান থেকেও বেতনভাতা উত্তোলন করে চলছেন নির্বিঘেœ। গরিসর সেন্ট্রাল হসপিটালের ম্যানেজার জানান, ড. রমিজউদ্দিন এখানে আবাসিক সার্জন হিসাবে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কাজ করছেন এবং নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে বেতনভাতা ও অন্যান্য কমিশনসহ মাসে দেড় লক্ষাধিক টাকা নেন। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, খাস সরকারি একজন কর্মকর্তা হয়ে তার মূল কর্মস্থলে উপস্থিত না থেকে এত বছর পর্যন্ত কিভাবে চাকরি করছেন? আর শেবামেক কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে অধ্যক্ষ এ বিষয়ে অজ্ঞ থাকেন তা সংশ্লিষ্ট অনেক কর্মকর্তারই বোধগম্য নয়। সরকার সারাদেশে বিশেষ করে হাসপাতাল এবং সংলগ্ন কলেজগুলোতে ২০১৫ সাল থেকে কর্মকর্তা চিকিৎসক, কর্মচারীদের কর্মস্থলে হাজিরায় আগমন এবং প্রস্থান’র সময় নিশ্চিত করার লক্ষে বায়োম্যাট্রিক হাজিরা মেশিন স্থাপন করে দেয়। আর এতে করে যেসব চিকিৎসক সময়মত তাদের কর্মস্থলে আসেননা এ ধরনের ব্যাক্তিরা পরে যায় বিপাকে। তাই বায়োমেট্রিক হাজিরা থেকে মুক্তি পেতে ভয়াবহ এই জালিয়াতির আশ্রয় নেয়। সারাদেশে হাজারো চিকিৎসকদের মাঝে এই ধরনের যান্ত্রিক জালিয়াতি এই প্রথম বলেও মনে করেন অনেকে। বিষয়টি নিয়ে শেবামেকের অধ্যক্ষ মাকসুমুল হকের সরণাপন্ন হলে তিনি প্রথমে বিষয়টি বেমালুম চেঁপে যায়। পরে কয়েকটি প্রমান তুলে ধরলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি আরও বলেন, এ বিষয়টি ইতোমধ্যে ডিজি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানতে পেরেছেন এবং ওই চিকিৎসকসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনাও দেয়া হয়েছিল। তবে, অধ্যক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করে উল্টো জালিয়াতির বিষয়টি সম্পুর্ন চেঁপে যায়।

ফলে ড. রমিজ অনেকটা নির্বিঘেœই তার অপরাধ চালিয়ে যায়। মূলত সঠিকভাবে অনুসন্ধান করলে এমন আরও অনেক চিকিৎসকই ফেঁেস যাবেন নিশ্চিত। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে ইতিপূর্বে ওষুধ চুরি, নিয়োগ জালিয়াতি, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় গুছ পার্টির বিভিন্ন অপকর্ম, আভ্যন্তরিন অনিয়ম প্রত্যক্ষ করলেও এবার সয়ং অধ্যক্ষ এবং তারই অধিনস্ত এক চিকিৎসকের এরুপ ভয়াবহ দূর্নীতি ইতিপূর্বে কেউ প্রত্যক্ষ করেনি। তারপরেও এই চিকিৎসক চাকরি করছেন বহাল তবিয়তে। ড. রমিজের মুল কর্মস্থলে প্রতিদিন হাজারো রোগী সেবা নিতে আসেন। পাশাপাশি শেবামেকে যে সকল শিক্ষানবীশ শিক্ষার্থী তাদের নির্ধারিত ক্লাসের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ না করে এই চিকিৎসক কেবল অর্থের প্রলোভনে সুদুর শরিয়তপুর অর্থাৎ বরিশালের বাইরে সময় দিচ্ছেন। যা সরকারি চাকরিজীবিতো বটেই সাধারন মানুষও ভিমরি খেয়ে যাবে। শরিয়তপুরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের ম্যানেজার অকপটে বলেন, ড. রমিজ যেহেতু সার্জন সেহেতু তিনি প্রতি রোগীর অস্ত্রপচার বা যেকোন সার্জারির জন্য প্যাকেজ ঘোষনা করেছেন।

তার নির্ধারিত প্যাকেজে যেসকল রোগী সম্মত হয় তাদেরকে যখন প্রয়োজন গভীর রাতেও অস্ত্রপচার শুরু করে। অথচ দীর্ঘ আটমাসে একদিনের জন্যও তার মূল কর্মস্থল বরিশালে আসেনি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসেনি এমন ভুতুরে কথা কেউ ভুলেও বিশ্বাস করবেনা। শেবামেকে তার স্থলে অন্যকেউ বায়োমেট্রিক হাজিরা দিয়ে দেয়। এভাবেই তার দুর্নিতীকে যায়েজ করে চালিয়ে যাচ্ছে অপকর্ম এবং গড়ে তুলছেন বিপুল অর্থ ।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD